জীববিজ্ঞান - জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র - রেচনের শরীরবৃত্ত

রেচনের শারীরবৃত্ত (Physiology of Excretion):
আমিষ জাতীয় খাদ্য বিপাকের ফলে দেহে নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্যপদার্থ সৃষ্টি হয়। এসব বর্জ্য দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং যতশীঘ্র সম্ভব দেহ থেকে নিষ্কাশন করা অত্যাবশ্যক। মানুষের প্রধান নাইট্রোজেনঘটিত রেচন(Excretion) বর্জ্য হলো- ইউরিয়া, ইউরিক এসিড, অ্যামোনিয়া, ক্রিয়েটিনিন ইত্যাদি। এর মধ্যে ইউরিয়ার পরিমাণ সর্বাধিক এবং এটি মূত্রের সাথে দেহ থেকে বেরিয়ে যায়। যকৃতে ইউরিয়া উৎপন্ন হয়ে রক্তের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে বৃক্কে পৌছায়। বৃক্কে মূত্র তৈরি হয়। রেচনে এরূপ ইউরিয়ার আধিক্য থাকাকে ইউরিওটেলিজম (ureotelism) বলে। যেসব প্রাণিতে ইউরিওটেলিজম দেখা যায় তাদের ইউরিওটেলিক প্রাণি (ureotelic animal) বলা হয়। মানুষ ইউরিওটেলিক হওয়ার কারণে রেচনের শারীরবৃত্তকে (Physiology of Excretion) তাই দুটি শিরোনামে আলোচনা করা হলো :

ক. নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য উৎপাদন এবং খ. মূত্র সৃষ্টি

ক. নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য উৎপাদন (Production of Nitrogenous Waste)
আমিষ খাদ্য পরিপাক হয়ে অ্যামিনো এসিডে পরিণত হয়। অ্যামিনো এসিড প্রধানত দেহ গঠন ও বৃদ্ধির কাজে ব্যবহৃত হয়। যকৃতে অব্যবহৃত ও অতিরিক্ত অ্যামিনো এসিড থেকে ডিঅ্যামাইনেজ এনজাইমের উপস্থিতিতে   ডিঅ্যামিনেশন (deamination) প্রক্রিয়ায় অ্যামিনো গ্রুপ (-NH2) হয়ে কিটো এসিড ও NH2, সৃষ্টি করে। কিটো এসিড শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। অ্যামিনো গ্রুপ পরিবর্তিত হয়ে NH3 (অ্যামোনিয়া) উৎপন্ন করে।

NH3 অত্যন্ত বিষাক্ত যা CO2 এর সাথে মিলিত হয়ে যকৃতে অরনিথিন চক্রের (ornithine cycle) মাধ্যমে ক্ষতিকর ও পানিতে দ্রবণীয় ইউরিয়া (urea)-য় পরিণত হয়। এটি ইউরিয়া চক্র নামেও পরিচিত। ইউরিয়া প্লাজমায় (রক্তরসে) অবস্থান করে এবং সংবহনতন্ত্রের মাধ্যমে বৃক্কে পৌছায়।

Content added By